
ঘড়ির যত ব্র্যান্ডালাপ: ২য় পর্ব
Brand, Famous Collection, Features, Fun Facts
August 11, 2019
February 19, 2020
Shuvodip Biswasবিশ্বের বিখ্যাত বিখ্যাত পাঁচটি ঘড়ির ব্র্যান্ড নিয়ে ইতোমধ্যেই একটি প্রবন্ধে আলোচনা হয়ে গেছে। কিন্তু ঘড়ির জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের সংখ্যা পাঁচটিতেই সীমাবদ্ধ নয়। অতএব, আরও কিছু জনপ্রিয় ব্র্যান্ড নিয়েই এই প্রবন্ধের দ্বিতীয় পর্ব৷
১. ল্যাঞ্জ অ্যান্ড সোনে
ল্যাঞ্জ অ্যান্ড সোনে মূলত জার্মান কোম্পানি, যেটি উচ্চমানের ঘড়ি তৈরির জন্য বিখ্যাত। ১৮৪৫ সালের গোড়ায় ফারডিন্যান্ড অ্যাডোল্ফ ল্যাঞ্জ এই কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেন৷ কোম্পানিটি রাজকীয় ও বিলাসবহুল পকেটঘড়ি তৈরির জন্য বিশেষ জনপ্রিয় ছিলো,
যা তৎকালীন ইউরোপের বিভিন্ন রাজপরিবারের সদস্যরা পরতে বেশি পছন্দ করতেন। অবশ্য পরবর্তীতে কোম্পানিটি বড় মাপের হাতঘড়ি তৈরি করতে শুরু করে। বেশ কয়েক দশক সাফল্যের সাথে ঘড়ি তৈরি করার পর ১৯৪৮ সালে পূর্ব জার্মান সরকার কোম্পানিটির মালিকানা নিয়ে নেয়৷
২. শোপার্ড
শোপার্ড কোম্পানি শুধু ঘড়িই তৈরি করে না বরং চোখধাঁধানো অলঙ্কারও তৈরি করে থাকে। কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেন লুই-ইউলিসি শোপার্ড, প্রথমে শুধু অলঙ্কারপ্রধান হলেও পরবর্তীতে এটি মেয়েদের ঘড়ি আর পকেটঘড়ি তৈরির জন্য বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। শোপার্ড কোম্পানির ঘড়ির বিশেষত্ব তাদের ডিজাইনে, খুবই দুর্লভ, জটিল এবং উচ্চমানের ডিজাইন ছাড়া শোপার্ড কোম্পানির ঘড়ি কল্পনাও করা যায় না।
১৯৭৬ শোপার্ড কোম্পানি এমন একটি ঘড়ি তৈরি করে, যেটিতে স্যাফায়ার কাঁচের নিচে হীরে বসানো ছিলো। আশির দশক থেকেই মূলত তারা পুরুষদের জন্য স্পোর্টসওয়াচ আর নারীদের জন্য হীরের গয়না তৈরি করতে শুরু করে। জেনিফার লরেন্স, সাইমন কোওয়েল প্রভৃতি বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরা এই ব্র্যান্ডের ঘড়ি ব্যবহার করতে পছন্দ করেন।

৩. আই ডব্লু এফ শেফহওসেন
যদি আপনি একই সাথে উন্নত মান, উন্নত দাম,
উন্নত চেহারা, উন্নত ইঞ্জিনিয়ারিং এবং উন্নত কারিগরির টেকসই একটি ঘড়ি কিনতে চান, তবে আই ডব্লু এফ শেফহওসেন ঘড়িই আপনার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত!
বহুদিন ধরে ব্র্যান্ডটি ঘড়ি তৈরি করে আসছে,
সেই ১৮৬৮ সাল থেকে। জার্মান এবং সুইস ঘড়ির সংকর এই ঘড়িগুলোকে ডিজাইন এবং ক্লাসিক গঠন দেখলেই চেনা যায়। এই ব্র্যান্ডের ঘড়িগুলোর বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে
Moon phase অর্থাৎ চাঁদের দশা নির্ণয়, Perpetual Calendar প্রভৃতি।
রবার্ট ডি নিরো,
অরল্যান্ডো ব্লুম, মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী,
সুপারমডেল অ্যাড্রিয়ানা লিমা এবং সাবেক ফুটবলার লুইস ফিগো, এদের প্রত্যেকেই আই ডব্লু এফ শেফহওসেন ব্র্যান্ডের ঘড়ি সংগ্রহ করেন বলে জানা যায়। যদিও ইদানীংকালে ব্র্যান্ডটি অন্যান্য ঘড়ির ব্র্যান্ডগুলোকে অনুসরণ করতে গিয়ে নিজের দাম অনেকটুকু হারিয়ে ফেলেছে, তবুও অচিরেই তারা আগের অবস্থানে ফিরে যাবে,
এমনটা আশা করাই যায়!

৪. প্যানেরাই
যারা ‘সিম্পলের মধ্যে গর্জিয়াস’ টাইপের একটি ঘড়ি চান নিজের জন্য,
প্যানেরাই ঘড়িগুলো তাঁদের জন্য আদর্শ হবার কথা!
১৮৬০ সালে ইতালির ফ্লোরেন্সে প্রথম কোম্পানিটি নিজের যাত্রা শুরু করে। অবশ্য কোম্পানিটি বিখ্যাত হয় আরও বেশ কিছুদিন পর, যখন এটি ইতালির রয়্যাল নেভির জন্য ঘড়ি বানাতে শুরু করে। পরবর্তীতে তারা আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যখন টেকসই ডাইভ-ওয়াচ তৈরি করতে শুরু করে।
রূপালী পর্দার অনেক নায়কই, যেমন,
সিলভেস্টার স্ট্যালোন, জেসন স্ট্যাথাম, টম ক্রুজ, হিউ গ্রান্ট প্রভৃতি; বিল ক্লিনটন, রাসেল ক্রো, পিয়ার্স ব্রোসন্যান, জেরি ফেরারা, এবং সুপারমডেল হেইডি ক্লাম প্রভৃতি এই ব্র্যান্ডের ঘড়ি পছন্দ করেন বলে জানা যায়৷ যদিও প্যানেরাইকে ঠিক বিলাসবহুল ব্র্যান্ড বলা যায় না,
তারা প্রায়ই এমন কিছু ঘড়ি তৈরি করে,
যেগুলো সাধারণ মানুষ সহজেই কিনে নিতে পারে।

৫. জ্যাগার লে’কোল্টার
জ্যাগার লে’কোল্টার হচ্ছে একটি সুইস ঘড়ি কোম্পানি; আগেরগুলোর মতই এটিও বিলাসবহুল ঘড়ি তৈরির জন্য বিখ্যাত। ঘড়িসংক্রান্ত বিভিন্ন আবিষ্কারই মূলত ব্র্যান্ডটির এত জনপ্রিয়তার কারণ। ব্র্যান্ডটির অন্যতম একটি আবিষ্কার হচ্ছে ১৯৪৫ সালে সর্বপ্রথম কোনো চাবি ছাড়া ঘড়ি তৈরি করা।

মূলত একটা কোম্পানি হুট করে ব্র্যান্ড হয়ে ওঠে না। বছরের পর বছর পরীক্ষা নিরীক্ষা, পরিশ্রম প্রভৃতির ফলে ধীরে ধীরে কোম্পানির ব্র্যান্ডভ্যালু বাড়ে, সেইসাথে পণ্যের মান এবং দামও। দামটা মূলত সেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা, গবেষণা, পরিশ্রমেরই। নইলে অন্তত কেউ লাখো টাকা খরচ করে রোলেক্স ঘড়ি কিনতে যেত না!
তথ্যসূত্র- https://improb.com/top-luxury-watch-brands-in-world/
ফিচার ছবি- improb.com
0 Comments